1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
দুর্নীতিভারত

পশ্চিমবঙ্গে টেট পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ

২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

টেট পাস করেও চাকরি না পেয়ে কলকাতায় বিক্ষোভ চলছে। তার মধ্যেই টেট পরীক্ষা হলো। সেখানে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ।

https://p.dw.com/p/4aYWD
কলকাতায় শিক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে সিপিএমের প্রতিবাদ।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে প্রতিবাদ কলকাতায়। ছবি: Subrata Goswami/DW

রোববার পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতামান পেরোনোর পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টার মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিয়োগ উঠলো। পরীক্ষা দিয়ে বেরোবার পর পরীক্ষার্থীরা জানালেন, তারা যে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন, তার সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন হুবহু এক।

রাজ্যের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, তিনি পর্ষদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন। তবে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যম সূত্রে তিনি জেনেছেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর কয়েকজন পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্র সামাজিক মাধ্যমে দেন। তাতে কারো কোনো অসুবিধা হয়নি। পরীক্ষা নির্বিঘ্নে হয়েছে।

পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার বলেছেন, ''পরীক্ষা শুরু হয় বেলা বারোটার সময়। একটার একটু পরে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে বলে শুনেছি। এতে কোনো পরীক্ষার্থীর কোনো অসুবিধা হয়নি।''  তিনি বলেছেন, ''পর্যদের গায়ে কালি লাগাতে কিছু অসাধু মানুষ এই কাজ করতে পারে।''

পরীক্ষার্থীদের বক্তব্য

পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সামাজিক মাধ্যমে যে সব প্রশ্ন ধুরছে, সেগুলি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গেছে।

পরীক্ষার্থী প্রলয় রায় আনন্দবাজারকে বলেছেন, ''মোবাইল নিয়ে যেতে দেয়া হয়নি, জলের বোতল নিয়ে যেতে দেয়া হয়নি। এত কড়া সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল। তারপরেও কী করে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়?''

এই সময়কে একাধিক নারী পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন এবং তারা যে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়েছেন, তা হুবহু এক। ইপ্সিতা সাহার বক্তব্য, ''চাকরি নেই। এখন প্রশ্ন ফাঁস করছে। মানুষ প্রতিবাদ করতে গেলে মার খাচ্ছেন। এই তো হবে। হল থেকে বের হয়ে ভয়ংকর ঘটনা।'' ২০২২ সালে টেট পাস এক পরীক্ষার্থী বলেছেন, তারা পরীক্ষা দিচ্ছেন এবং প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে এটা মানা যায় না। টালিগঞ্জের স্বান্তনা মণ্ডল ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, ''গত বছর পাস করা কেউ চাকরি পাননি। নোটিফিকেশন জারি হয়নি। আমরা চাই, সকলে চাকরি পান।''

পর্যদ জানিয়েছে, প্রায় দুই লাখ ৬৭ হাজার পরীক্ষার্থী রোববার টেট পরীক্ষা দিয়েছেন।

বিরোধীদের বক্তব্য

রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, ''টেটের প্রশ্নপত্র বাইরে বিক্রি হয়েছে। তবে  যতই পরীক্ষা হোক, চাকরি হবে না।''

রাজ্য সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ''পশ্চিমবঙ্গে টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়, টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিলি হয়, টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়।'' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ''তৃণমূল সরকার একটা পরীক্ষাও স্বচ্ছ্বতার সঙ্গে নিতে পারেনি।''

বামেদের জোটশরিক আইএসএফের নেতা নওসাদ সিদ্দিকি জানিয়েছেন, ''এই রাজ্য তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে ঠিকভাবে স্বচ্ছ্ব নিয়োগ হবে না। এই দলই দুর্নীতিগ্রস্ত।''

'নিয়োগ না করে শুধু পরীক্ষা কেন?'

প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত বলেছেন, ''শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। কিন্তু নিয়োগের পরীক্ষা হচ্ছে। নয় বছর ধরে চাকরি পাননি এমন প্রার্থী রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। গত বছরও পরীক্ষা হয়েছে, চাকরি হয়নি। এই বছরও পরীক্ষা হলো। তাতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগও উঠলো।''

তার মতে, ''আসলে পরীক্ষার নিয়ম মানা হলো ঠিকই, কিন্তু যারা পাস করছে, তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দেয়া হচ্ছে না।  একটা আনুষ্ঠানিকতার পর্যায়ে বিষয়টি চলে গেছে। এত বিতর্ক, আইনি লড়াই, প্রতিবাদের পরেও নিয়োগ না হওয়ার ফলে গোটা শিক্ষাব্যবস্তার উপরই আঘাত এসে পড়ছে।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)