1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মশা দিয়েই মশার বংশবৃদ্ধি রোখার উদ্যোগ

১৬ জানুয়ারি ২০২৪

‘মশা মারতে কামান দাগা'-র কথা আমরা শুনেছি৷ কিন্তু ‘বিষে বিষক্ষয়’-এর মতো মশা কাজে লাগিয়ে মশা মারা গেলে কেমন হয়? সুইজারল্যান্ডে এক প্রকল্পে ঠিক সেই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4bI4V
এশিয়ান টাইগার মশা ভর্তি একটি পাত্র হাতে জার্মানির এক গবেষক (ফাইল ছবি)
গবেষণার অংশ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের একটি গ্রামে ২০ লাখ এশিয়ান টাইগার প্রজাতির মশা ছাড়ছেন গবেষকরাছবি: Uwe Anspach/dpa/picture-alliance

একটি ল্যাবে এশিয়ান টাইগার প্রজাতির মশার সম্ভার দেখার মতো৷ লার্ভা থেকে শুরু করে পরিণত বয়সের মশার কোনো অভাব নেই৷ ইউরোপের অন্য কোনো মানুষের বোধহয় গবেষক এলেওনোরা ফ্লাসিওর মতো টাইগার মশার আচরণ সম্পর্কে এত গভীর জ্ঞান নেই৷

বহু বছরের প্রস্তুতির পর এলেওনোরা এবার অসাধারণ এক পরীক্ষা শুরু করছেন৷ তিনি একেবারে নতুন পদ্ধতিতে এই মশার দ্রুত বংশবৃদ্ধির মোকাবিলা করতে চান৷ নির্বীজ নর মশা ছেড়ে তিনি সেই লক্ষ্য পূরণের কৌশল নিচ্ছেন৷

সুইজারল্যান্ডের দক্ষিণে ছবির মতো দেখতে গ্রাম মরকোটে-তে গবেষকরা চলতি বছর ২০ লাখ এশিয়ান টাইগার প্রজাতির মশা ছাড়ছেন

মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এলেওনোরা ছোট এই গ্রামের প্রায় ৭০টি বিভিন্ন জায়গায় প্রতি সপ্তাহে কিছু মশা ছাড়ছেন৷ তবে লাখ লাখ মশা ছাড়া হলেও গ্রামের বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই৷ এলেওনোরা বলেন, ‘‘আসলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই৷ এগুলি নর মশা, যা মানুষকে কামড়ায় না৷ শুধু উড়ে বেড়ায়৷ কয়েকদিন পরেই মরে যায়৷''

নর মশার এত কম আয়ুর কারণ স্পষ্ট৷ নির্বীজ করার প্রক্রিয়া, ল্যাবের ধকল ও পরিবহণের কারণে সেগুলি বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে৷ তবে আয়ু কম হওয়া সত্ত্বেও মাদী মশার কাছে সেগুলি আকর্ষণীয়৷ নর মশাকেও প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে হয়৷ নির্বীজ নর মশার বিশাল সংখ্যার কারণে মাদি মশাগুলি তাদের এড়িয়েও চলতে পারে না৷ এলেওনোরা ফ্লাসিও বলেন, ‘‘স্টেরিলাইজড নর মশা মাঠে চরে বেড়ানো স্বাভাবিক মাদী মশার সঙ্গে মিলিত হয়৷ মিলন ঘটলে মাদী মশা সারা জীবন আর সন্তান ধারণ করতে পারে না৷’’

এভাবে শেষ পর্যন্ত টাইগার মশার গোষ্ঠীর বিনাশ ঘটানো যেতে পারে৷ পরীক্ষামূলক এলাকায় টাইগার মশার সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমানোই এলেওনোরার লক্ষ্য৷

মশার বংশ বিনাশ করবে ল্যাবের পুরুষ মশা

ইটালির বোলোনিয়া শহরে কৃষি ও পরিবেশ কেন্দ্রে স্টেরাইল নর মশার প্রজনন ঘটানো হয়৷ ডিম পাড়ার সময়েই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ খাঁচার মধ্যে মশার মিলন ঘটে৷ মাদী মশাকে নিয়মিত পশুর রক্ত খাওয়ানো হয়৷ কারণ রক্ত না চুষে খেলে সেগুলি ডিম তৈরি করতে পারে না৷

সেই ডিম এক সপ্তাহের মধ্যেই লার্ভায় পরিণত হয়, তারপর পিউপা বা গুটিপোকার রূপ নেয়৷ এই স্তরেই তথাকথিত ‘ডাইমেনশন অ্যানালিসিস’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নর ও মাদী আলাদা করা হয়৷ নর মশা মাদী মশার তুলনায় আকারে ছোট৷ ফলে শুধু চেহারার ভিত্তিতেই সেগুলিকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আলাদা করা যায়৷ পিউপাগুলিকে পানির মধ্যে ফেলে এক্সরে করা হয়৷

ফলে প্রজনন অঙ্গগুলি সবচেয়ে সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া দেখায়৷ এভাবে নর মশা নির্বীজ হয়ে পড়ে, তবে প্রাণে বেঁচে যায়৷ এই প্রক্রিয়া অবশ্য এখনো খুবই ব্যয়বহুল৷ এক হাজার স্টেরিলাইজড মশার দাম প্রায় ৬০ ইউরোর মতো৷ ফলে চলতি বছরের এক্সপেরিমেন্টের জন্য প্রায় দুই লাখ ইউরো ব্যয় হচ্ছে৷

তবে পরীক্ষা সফল হলে এবং আরো বড় আকারে এই প্রক্রিয়ার প্রয়োগ শুরু হলে ব্যয় এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাবে৷ এলেওনোরা ফ্লাসিও বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, যে কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া অনেক সস্তা হয়ে যাবে৷ বাণিজ্যিক স্বার্থ দেখা দিলেই ব্যয় কমে যাবে৷ অর্থাৎ এই প্রযুক্তি তেমন ব্যয়বহুল নয়৷ বড় আকারে কাজে লাগালেই ব্যয় কমে যাবে৷’’

এই প্রক্রিয়া সফল হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রকল্পটি আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে৷ বিশেষ করে যে সব দেশে টাইগার প্রজাতির মশা মানুষের জীবন বিপন্ন করছে, সেখানে এই প্রক্রিয়া কাজে লাগবে৷

আনাটল হুগ/এসবি

মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমায় যে ব্যাকটেরিয়া

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান