1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
মানবাধিকারযুক্তরাজ্য

বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্ল্যানের পক্ষে ভোট ব্রিটিশ এমপিদের

১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজের দলের বিদ্রোহ সামলে অত্যন্ত বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্ল্যান পাস করাতে পারলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

https://p.dw.com/p/4a5oX
১০ ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন সুনাক।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে আসা নিয়ন্ত্রণ করতে চান। ছবি: James Manning/REUTERS

অভিবাসন-প্রত্যাশীদের রুয়ান্ডাতে পাঠিয়ে দেয়ার এই পরিকল্পনা হাউস অফ কমন্সে ৩১৩-২৬৯ ভোটে জয়ী হয়েছে।

এরপর সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ সুনাক লিখেছেন, ''ব্রিটিশ নাগরিকরাই ঠিক করবেন, দেশে কারা আসবেন, কারা নয়। কোনো অপরাধী চক্র বা বিদেশি কোর্ট এটা ঠিক করবে না।''

পার্লামেন্টে সুনাকের দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তার দলের বেশ কয়েকজন এমপি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছিলেন। বিরোধীরা তো আগে থেকেই জানিয়েছিলেন, তারা এই সিদ্ধান্তের সমর্থক নয়। ফলে ভোটাভুটিতে হেরে গেলে সুনাককে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হত।

এই অবস্থায় কোনো ঝুঁকি না নিয়ে পরিবেশমন্ত্রী গ্রাহাম স্টুয়ার্টকে কপ২৮ শীর্ষবৈঠক ছেড়ে লন্ডন ফিরে এসে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে বলা হয়।

সুনাক ও সরকারের বক্তব্য

ভোটাভুটির আগে সুনাক সামাজিক মাধ্যমে পর্লামেন্টের সদস্যদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিতে বলেন। তার দাবি, ''এটা বেআইনি অভিবাসন রুখতে সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ। তিনি লিখেছিলেন, এই বিল পাস হলে কে ব্রিটেনে ঢুকতে পারবে, তা আমরা ঠিক করতে পারব। অভিবাসীদের নৌকাগুলিকে থামানোর জন্য আমাদের এই বিল পাস করাটা জরুরি।''

নৌকা থামানো মানে ব্রিটেনে আসার জন্য যে নৌকাগুলি ইউরোপ থেকে আসে এবং রক্ষণশীল দল বারবার যার বিরোধিতা করে এসেছে। এই বছর এইভাবে ২৯ হাজার মানুষ ব্রিটেনে এসেছেন। ২০২২ সালে এসেছিলেন ৪৬ হাজার মানুষ।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সুনাক কয়েক ডজন কট্টরপন্থি এমপি-কে নিজের বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রাতঃরাশ বৈঠকে ডেকেছিলেন।

বেআইনি অভিবাসন সংক্রান্ত মন্ত্রী মাইকেল টমলিসন জানিয়েছেন, এই বিলটি অত্যন্ত কড়া।

সমালোচকরা যা বলছেন

রক্ষণশীল দলের কট্টরপন্থিরা বলছেন, এই বিলে এটা বলা নেই, যে সব অভিবাসন-প্রত্যাশী ব্রিটেনে চলে আসবেন, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তখন তারা ব্রিটিশ আদালতে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারবেন। মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় আদালতেও যেতে পারবেন।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি বলেছে, এই পরিকল্পনা কার্যকরই করা যাবে না। তাছাড়া এই পরিকল্পনা অনৈতিক। অবিবাসনপ্রত্যাশীদের সাড়ে ছয় হাজার কিলোমিটার দূরের রুয়ান্ডাতে পাঠানো মেনে নেয়া যায় না। গতমাসে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রুয়ান্ডাকে কখনই নিরাপদ দেশ বলা যায় না।

যুক্তরাজ্যের অ্য়ামনেস্টি ইন্টারন্য়াশনালের প্রধান সাচা দেশমুখ বলেছেন, ''এই পরিকল্পনায় মানবাধিকারের দারণাকেই আক্রমণ করা হয়েছে।''

সুনাক জানিয়েছেন, হাউস অফ কমন্সে বিলটি অনুমোদিত হওয়ার পর তারা নতুন উদ্যমে এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন। আদালতের উদ্বেগের বিষয়গুলিই মাথায় রাখা হবে।

পরিকল্পনায় যা বলা হয়েছে

এই পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ব্রিটেন থেকে শয়ে শয়ে অবিবাসন-প্রত্যাশীকে পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডাতে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তারা সেখানেই বসবাস করবেন।

যুক্তরাজ্য ইতিমধ্য়েই তিন হাজার তিনশ কোটি টাকা রুয়ান্ডাকে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের দাবি, এই নিয়ম চালু হলে অবিবাসীরা আর যুক্তরাজ্যে আসবেন না।

এই বিল নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছে, তখন একজন অভিবাসন-প্রত্যাশী মারা যান। তাঁর আবেদন বিচারাধীন ছিল। এরপরই মানবাধিকার সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ব্রিটেনে অবিবাসীদের জন্য অমানবিক ব্যবস্থা চালু আছে।

জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)