1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশইটালি

ডিজেল, বিদ্যুৎ ও ব্যাটারিতে চলে যে ট্রেন

২২ জানুয়ারি ২০২৪

ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহণ ব্যবস্থায়ও কার্বন নির্গমন এড়ানোর চাপ বাড়ছে৷ ইটালিতে জাপানের এক কোম্পানি বেশ বাস্তবসম্মত এক সমাধানসূত্র কাজে লাগাচ্ছে৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশেও সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ চলছে৷

https://p.dw.com/p/4bXxl
ইউরোপের আঞ্চলিক পরিবহণ ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, ইটালির টাস্কানি অঞ্চলে এখনই সেটা দেখার সুযোগ রয়েছে৷ সেখানে হিটাচি কোম্পানির ব্যাটারিচালিত ‘ব্লুস' ট্রেন চালানো হচ্ছে৷
ইটালির রেল যোগাযোগ পরিবেশবান্ধব করার উদ্যোগ (ফাইল ফটো)ছবি: Giuseppe Lami/ANSA/picture alliance

ইউরোপের আঞ্চলিক পরিবহণ ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, ইটালির টাস্কানি অঞ্চলে এখনই সেটা দেখার সুযোগ রয়েছে৷ সেখানে হিটাচি কোম্পানির ব্যাটারিচালিত ‘ব্লুস' ট্রেন চালানো হচ্ছে৷ কোম্পানির প্রতিনিধি মার্কো সাকি বলেন, ইটালির উত্তরে হিটাচি কোম্পানির পিস্টোরিয়ার কারখানায় ব্লুস ট্রেন তৈরি করা হয়৷ জাপানে কোম্পানির সদর দপ্তরের সহায়তায় সেখানেই এই ট্রেন সৃষ্টি করা হয়েছে৷

ইঞ্জিনিয়ার মার্কো সাকি ও তাঁর টিম করোনা মহামারির সময়ে পরিকল্পনার কাজ শুরু করেছিলেন৷ এখনো পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ট্রেন লাইনে নামানো হয়েছে৷ মার্কোর মতে, ‘‘ব্যাটারি ও ডিজেলের মেলবন্ধনই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ৷ প্রচলিত ডিজেল ট্রেন তৈরি করা তেমন কঠিন কাজ নয়৷ ডিজেলের পাশাপাশি ব্যাটারি চালু করে জ্বালানির ব্যবহার কমানোই ছিল যাকে বলে ‘ডিসরাপটিভ' প্রযুক্তি৷'' 

ইউরোপের ভবিষ্যৎ ‘ব্লুস’ ট্রেন

প্রতিটি কামরায় দুটি করে ব্যাটারি বসানো আছে৷ ফলে প্রচলিত ডিজেল ট্রেনের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়৷ ট্রেন চলার সময়েই ব্যাটারি চার্জ করা যায়৷ এমনকি ইলেকট্রিক গাড়ির মতো ব্রেক থেকে পাওয়া শক্তিও সেই কাজে লাগানো হয়৷

লাইনের যে সব অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে, সেখানে ওভারহেড তার থেকে শক্তি আসে৷ এখনো ডিজেল ইঞ্জিনের প্রয়োজন থাকলেও অদূর ভবিষ্যতে ট্রেন পুরোপুরি সেই জ্বালানি ছাড়াই চলবে৷ হিটাচি রেলের কর্মকর্তা লুকা দাকিলা বলেন, ‘‘সম্ভবত ২০৩০ সালে হয় পুরোপুরি ব্যাটারিচালিত, অথবা হাইব্রিড প্রযুক্তির প্রায় ৩,০০০ নতুন ট্রেন বাজারে আসবে৷ আমাদের কাছে হাইব্রিড সমাধানসূত্র রয়েছে৷ এবার আমরা বছরখানেকের মধ্যেই পুরোপুরি ব্যাটারিচালিত ট্রেন বাজারে আনবো৷ যে সব এলাকায় ইলেকট্রিক লাইন নেই, সেখানকার চাহিদা মেটাতে এটা এক ‘স্মার্ট'জবাব হবে বলে আমাদের বিশ্বাস৷''

বিশেষ করে টাস্কানির মতো ইউরোপের গ্রামাঞ্চলে ওভারহেড ইলেকট্রিক তারের অভাব রয়েছে৷ রেল নেটওয়ার্কের বৈদ্যুতিকরণ বেশ ব্যয়বহুল কাজ৷ তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে এমন উদ্যোগের আর্থিক সার্থকতা নেই৷

ফ্রোরেন্স শহর থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে বর্জো সান লোরেন্সো নামের টাসকানির ছোট গ্রাম অবস্থিত৷ সেখানকার বেশিরভাগ ট্রেন বিকট শব্দ ও পরিবেশ দূষণ করে৷ কিন্তু কয়েক মাস আগে নতুন ট্রেনগুলি স্টেশনে ঢোকা ও বের হবার সময় ডিজেল ইঞ্জিন বন্ধ করে দিচ্ছে৷

এই ট্রেনগুলি যে আরো পরিবেশবান্ধব, টাস্কানির মানুষ সে বিষয়েও সচেতন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গত বছরের শরৎ কালেই সেই অঞ্চলে বিশাল বন্যা দেখা গেছে৷ লুকা দাকিলা বলেন, ‘‘আমাদের মতে, দূষণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমাতে মাঝারি মেয়াদে ব্যাটারিই সেরা উপায়৷ আমরা জানি, আমাদের প্রতিযোগীরা অন্যান্য সমাধানসূত্রের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে৷ আমরা খুশিমনে পাল্লা দিতে প্রস্তুত৷ হাইড্রোজেনের মতো কিছু সমাধানসূত্র নিয়ে আমরা জাপানে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছি৷''

ব্যাটারির সুবিধা হলো, প্রচলিত ট্রেনেই সেগুলি বসানো যায়৷ ইন্টারসিটি ট্রেনগুলি অদূর ভবিষ্যতেই ব্যাটারি ব্যবহার করতে চলেছে৷ সেটা উড়ালের বিকল্পও বটে

শুধু টাস্কানি অঞ্চলে হিটাচি কোম্পানিই নয়, জার্মানির সিমেন্স এবং ফ্রান্সের আলস্তোম এই নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে৷ গোটা ইউরোপে এমন ধরনের ট্রেন দেখতে বেশিকাল অপেক্ষা করতে হবে না৷

বিয়র্গিট মাস/এসবি