1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজলেবানন

ইইউ-লেবানন চুক্তি সিরীয় শরণার্থীদের জন্য খারাপ খবর?

৮ মে ২০২৪

২০২৭ সাল পর্যন্ত লেবাননকে এক বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ এর মধ্যে ৭৩৬ মিলিয়ন ইউরো শরণার্থীদের দেখাশোনার জন্য৷ বাকিটা সীমান্ত ও অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য৷

https://p.dw.com/p/4fcPQ
বৈরুত, লেবানন | উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন, নিকোস ক্রিস্টোদৌলিদেস এবং নাবিহ বেরি
উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এবং নিকোস ক্রিস্টোদৌলিদেস গত সপ্তাহে বৈরুতে লেবাননের সংসদীয় স্পিকার নাবিহ বেরির (সর্বডানে) সাথে বৈঠক করেন ছবি: Hussein Malla/AP/picture alliance

এর মধ্যে ৭৩৬ মিলিয়ন ইউরো শরণার্থীদের দেখাশোনার জন্য৷ বাকিটা সীমান্ত ও অভিবাসী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য৷ 

গত বৃহস্পতিবার (২ মে) বৈরুতে এ সংক্রান্ত চু্ক্তি সই হয়েছে৷

তবে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে এবং অবৈধ উপায়ে ইইউতে প্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে৷

৫২ লাখ জনসংখ্যার দেশ লেবাননে প্রায় ১৫ লাখ সিরীয় শরণার্থী বাস করছেন৷ তাদের বেশিরভাগই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর লেবাননে আশ্রয় নিয়েছেন৷

সিরীয় শরণার্থীদের সঙ্গে লেবাননের নাগরিকদের প্রায় সংঘর্ষ হয়৷ লেবাননের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারণে উত্তেজনা আরও বেড়েছে৷

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনী সিরীয়দের রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে সিরিয়ায় পাঠিয়ে দিচ্ছে৷ সিরিয়ায় তারা গ্রেপ্তার, নির্যাতন বা হত্যার শিকার হচ্ছেন৷ অনেককে জোর করে সেনাবাহিনীতে ভর্তি করানো হচ্ছে৷

এ কারণে অনেক সিরীয় নাগরিক লেবানন ছাড়ার চেষ্টা করছেন৷ তাদের অনেকে সাইপ্রাস যাওয়ার চেষ্টা করছেন৷ এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রায় দুই হাজার মানুষ সাইপ্রাসে প্রবেশ করেছেন৷ গতবছর একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল মাত্র ৭৮৷

লেবাননের কিছু মানুষ মনে করছেন, সিরীয় শরণার্থীদের লেবাননে রাখার জন্য অর্থ দিচ্ছে ইইউ৷ এর মধ্যে কিছু সত্যতা থাকতে পারে বলে মনে করেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইইউ পরিচালক ফিলিপ ড্যাম৷ তুরস্ক ও টিউনিশিয়ার সঙ্গে সই হওয়া এমন চুক্তির কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি৷

লেবানন ও ইইউর মধ্যে চুক্তি সইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ সেই সময় তার দেওয়া কিছু বক্তব্য সমস্যাজনক বলে মনে করছেন ড্যাম৷ ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, ‘‘অভিবাসন ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি (লাইয়েন), যেটা সমস্যাজনক৷ কারণ, তারাই সিরীয়দের বিতাড়নের সঙ্গে জড়িত৷''

স্বেচ্ছায় সিরিয়ায় ফেরা এবং সিরিয়ায় ফিরে যাওয়ার পর সিরীয়দের সহায়তা নিয়েও কথা বলেছেন লাইয়েন৷ এটি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ড্যাম৷ কারণ, তার সংস্থাসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থার আশঙ্কা, এর মাধ্যমে সিরিয়ার কিছু অংশে ফেরা নিরাপদ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হতে পারে৷ অথচ মার্চে এক যৌথ বিবৃতিতে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স বলেছে, ‘‘সিরিয়ায় এখনও যুদ্ধ শেষ হয়নি৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় সিরিয়ায় শরণার্থীদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের শর্তগুলি এখনও পূরণ হয়নি৷''

থিংক ট্যাংক ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার কেলি পেটিলো বলেন, ইইউ ও লেবাননের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তার উদ্দেশ্য কখনও সিরীয় শরণার্থীদের সহায়তা ছিল না৷ ‘‘সাইপ্রাস ও ইইউর বাকি অংশে অভিবাসন ঠেকানোই এই চুক্তির প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য৷''

তিনি বলেন, লেবাননের সেনাবাহিনীকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার কারণে সিরীয় শরণার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে৷ সে কারণে তারা বিতাড়িত হওয়ার চেয়ে নিজেরাই লেবানন ছাড়তে চাইবে বলে মনে করছেন পেটিলো৷ তাই লাইয়েন দৃশ্যত যা অর্জন করতে চান, আদতে তার বিপরীত ঘটনা ঘটবে এবং সিরীয়রা ইউরোপে যাওয়ার জন্য আরও বেশি চাপ অনুভব করবে বলে মনে করছেন তিনি৷

ক্যাথরিন শায়ের/জেডএইচ